ভারত সবসময় বলেছে তারা যুদ্ধ চায় না। প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তি চাই, সহযোগিতা চাই। বাংলাদেশ তো সেই দেশ, যার জন্ম হয়েছিল ভারতের রক্ত আর অস্ত্রের সহায়তায়। কিন্তু পঞ্চাশ বছর পর দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। যে রাষ্ট্রকে একসময় ভ্রাতৃত্বের প্রতীক মনে করা হয়েছিল, আজ তা হয়ে উঠছে অবিশ্বাস, মৌলবাদ আর প্রতারণার কেন্দ্র।
সীমান্ত পরিস্থিতি প্রতিদিনই উত্তপ্ত। আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসনের চাপে নাজুক হয়ে পড়ছে। এই প্রবাহের সঙ্গে ঢুকছে মাদক, জাল টাকা আর উগ্র নেটওয়ার্ক। সীমান্ত তাই কেবল ভৌগোলিক রেখা নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে।
পানির বিষয়েও বারবার দ্বন্দ্ব বাড়ছে। বাংলাদেশ অভিযোগ তোলে নদীর পানি আটকে রাখা হচ্ছে। কিন্তু ভারতের ভেতরে রাজ্যগুলোরও নিজস্ব সংকট রয়েছে। খরার মতো সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও চাপের মধ্যে থাকে। অথচ এ ইস্যুটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাজনৈতিক রূপ পাচ্ছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়ায়।
সবচেয়ে সংবেদনশীল হলো সিলিগুড়ি করিডর বা চিকেন’স নেক। এই সরু ভূখণ্ড ভারতের উত্তর–পূর্বকে গোটা দেশের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে। সেখানে অশান্তি মানে পুরো উত্তর–পূর্ব বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া।
এজন্যই আসামের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “বাংলাদেশ যদি আমাদের চিকেন’স নেক আক্রমণ করে, তবে আমরা তার দুই চিকেন’স নেক ভেঙে দেব।”
বাংলাদেশের ভেতরে মৌলবাদী উত্থানও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে কালেমার পতাকা ওঠানো কিংবা সীমান্তে উগ্রবাদীদের সক্রিয়তা—এসব কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, বরং অস্থিরতার বার্তা। এখনই কড়া ব্যবস্থা না নিলে সেই আগুন সীমান্ত পেরিয়ে এপারেও পৌঁছাতে দেরি হবে না।
সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর প্রতিদিনের নির্যাতনের খবর দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। মন্দির ভাঙা, নারী নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড—এসব কেবল বাংলাদেশের ভেতরের ঘটনা নয়, বরং সীমান্তের এপারেও প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে।
এদিকে পাকিস্তানের ছায়া আবার স্পষ্ট হয়ে উঠছে। অতীতে পূর্ব–পশ্চিমের চাপের কৌশল আজ যেন নতুন করে ফিরে এসেছে। ইসলামিক দুনিয়ার কিছু দেশের মদদও বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তিকে উসকে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এই অস্থিরতা যদি আরও বাড়ে, তাহলে এর অভিঘাত কেবল বাংলাদেশের ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকবে না।
রোহিঙ্গা ইস্যুও বড় মাথাব্যথা। দেড় মিলিয়নের বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে, যাদের অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। তাদের ভেতরে উগ্র গোষ্ঠী ঢুকে পড়ছে, মাদক ও অস্ত্র পাচার বাড়ছে। এই সংকট সামলানো না গেলে ভারতের জন্য সরাসরি নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হবে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন ভ্রাতৃত্বের প্রতীক নয়, বরং অস্থিতিশীল এক রাষ্ট্র, যার ভেতরের মৌলবাদ, পাকিস্তানের কৌশলগত খেলা আর ইসলামিক দুনিয়ার সমর্থন ভারতের নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে।
এ অবস্থায় সংঘাতকে আর নিছক আক্রমণ বলা যায় না—এটা এখন আত্মরক্ষার লড়াই। সীমান্তে হঠাৎ করে যদি যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, তবে তাতে আর তেমন বিস্ময়ের কিছু থাকবে না।
তবে এর গতিপথ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক কূটনীতির নতুন সমীকরণের ওপর। পুতিনের আহ্বানে ভারত ও চীন যদি ঘনিষ্ঠ কোনো বন্ধনে পৌঁছায়, তাহলে পুরো পরিস্থিতিই ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান চীন সফরে গেছেন, আর শীঘ্রই মোদী যাচ্ছেন বেইজিং।
একই সময়ে পুতিনও দিল্লিতে আসছেন সেরকম শুনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে লাভ–ক্ষতির হিসাব আর বন্ধুত্বের ভারসাম্য যদি এক জায়গায় এসে মেলে ba বাংলাদেশে মৌলবাদ দমন করা না গেলে, তবে দেরি হলেও ভারত–বাংলাদেশ যুদ্ধ প্রায় অনিবার্য বলা যায়।
নোটঃ পোস্টটি আগস্ট মাসের ২১, ২০২৫ এই প্রথম ফেইসবুকে পোস্ট করেছিলাম।
--
#indian #Bangladesh #indiabangladeshwar #BangladeshPolitics #BangladeshMinorities #cht #hindustan #ChandranathTemple #IndiaBangladesh #hindus
--