গতকাল মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনার পাড়ে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনা ঘটলো। স্থানীয়রা বলছেন, বিকেলের দিকে হঠাৎ নদীপথে ট্রলার ভেসে আসে। এক ঝলকে দেখা গেল—৩০ থেকে ৪০ জনের দল, হাতে রাইফেল, পিস্তল, ধারালো অস্ত্র। গুলির শব্দে কেঁপে উঠল চারপাশ। পুলিশ জানাচ্ছে, হামলাকারীদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো থানা থেকে লুটকৃত।

প্রশ্ন হলো, কীভাবে এই তথ্য নিশ্চিত হলো? পুলিশ কি ফোরেনসিক বা ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করেছে, নাকি স্থানীয়দের চোখের দেখা সাক্ষ্য থেকে এসেছে এই তথ্য? স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন, “আমরা তো দেখলাম ট্রলার থেকে নামল, হাতে পিস্তল। তবে এরা কারা? সত্যিই কি লুট করা অস্ত্র, নাকি অন্য কোনো খেলা?”

এ ঘটনা নিয়ে এলাকাজুড়ে ভীতি আর কৌতূহল। দোকানদার বলছেন, “বিকেলের শান্ত সময়টা যেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল।” অন্য এক স্থানীয়ের ভাষায়, “এমন অস্ত্র আগে আমাদের চোখে পড়েনি। প্রশ্নটা এখন সবার—এই অস্ত্র এলো কোথা থেকে?”

কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে ছোটখাটো সংঘাত, হাতাহাতি শোনা গেলেও এরকম থানায় হামলার ঘটনা ঘটছে না। সেখানে ঠিক উল্টো চিত্র—গ্রামের পর গ্রাম সেনাবাহিনী তল্লাশির নামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাহাড়ি মানুষদের হয়রানি করছে।

পাহাড়ের মানুষদের জন্য পরিচয় মানে বেঁচে থাকা, জমি রক্ষা মানে লড়াই। ৯০-এর দশক থেকে আজ অবধি সেনা ক্যাম্প মানেই তল্লাশি, আতঙ্ক আর অপমান। অথচ সমতলে নদীপথে ডাকাতরা থানায় হামলা চালায়, অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া যেন সবটাই নীরব।

প্রশ্ন হলো, পাহাড়ে কি ডাকাতরা বাস করে? না কি সাধারণ নাগরিকরা? তাহলে কেন পাহাড়িদের ঘরে ঘরে তল্লাশি? কেন সমতলে থানার অস্ত্র চলে গেল দুর্বৃত্তদের হাতে?

এটা কি কেবল নিরাপত্তার ব্যর্থতা, নাকি রাষ্ট্রের দৃষ্টি অন্যত্র? পাহাড়ে নিরীহদের চাপে রাখা সহজ, কিন্তু সমতলে সাহসীদের লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ—এ দ্বৈত আচরণ কার স্বার্থে?

আপনার মত কী? এই বৈপরীত্য কি শুধু কাকতালীয়, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও বড় কোনো গল্প?