গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের দিনে ঘটল এক ভিন্ন দৃশ্য। লাল কাপড় সরাতেই দেখা গেল একটি ফলক, যেখানে লেখা ছিল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নাম। অনেকে হলে হয়তো হাসিমুখে ফিতা কাটতেন, ছবি তুলতেন, প্রচার চাইতেন।
কিন্তু তিনি করলেন একদম উল্টো কাজ। ফলক দেখে মুহূর্তেই রেগে উঠে বললেন, “এখানে আমার নাম কেন? এটা কি আমার বাপের টাকায় করছে?”
এই এক বাক্য যেন আমাদের মনে করিয়ে দিল, প্রকৃত নেতৃত্ব কেমন হওয়া উচিত। দেশের প্রতিটি উন্নয়ন, প্রতিটি কাজ জনগণের টাকায় হয়। এখানে ব্যক্তিগত গৌরবের জায়গা নেই। সাধারণত আমরা রাজনীতি বা প্রশাসনে দেখি, যারা কিছু করেন, তাদের নাম, ছবি, প্রচার সবকিছু জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মুহাম্মদ ফাওজুল কবির দেখালেন অন্য দৃষ্টান্ত—তিনি চান কাজ হোক, প্রচার নয়; দেশের টাকায় নামের জন্য নয়, সেবার জন্য কাজ করতে হবে।
ব্যক্তি পূজা থেকে কাজের প্রাধান্য—এই যেন আলোহীন ইউনুস সরকারে এক বিন্দু আলোর ঝলক। এই ভদ্রলোক সম্পর্কে আমি কম জানি, তবে খবরে এই ফুটেজ দেখার পর মনে হলো, সরকারে এমন কেউ আছেন যারা এখনো জনগণের কথা ভাবেন এবং যারা এখনো শ্রদ্ধার যোগ্য।
এটাই আসল শিক্ষা। একজন নেতার পরিচয় তার পদবি নয়, তার কর্মের সততা। যে মানুষ নিজের নাম মুছে দিতে বলেন, তিনি বুঝিয়ে দেন, দেশের উন্নয়ন কোনো একক ব্যক্তির নয়, এটি জনগণের।
ভাবুন তো, যদি এমন নীতিবান মানুষদের সংখ্যা বাড়ে? যদি এমন মানুষ নেতৃত্বে আসে, যারা সৎ, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহি করতে প্রস্তুত? তাহলে বাংলাদেশ হয়তো দুর্নীতির অন্ধকার থেকে বেরিয়ে একদিন স্বপ্নের দেশের পথে হাঁটবে। যেখানে প্রচার নয়, কাজের গৌরব মুখ্য হবে।
এই ঘটনার শিক্ষা আমাদের জন্য পরিষ্কার—আমরা এমন নেতৃত্ব চাই, যারা নামের জন্য নয়, দেশের জন্য কাজ করবে। যারা মনে করবে, সরকারি কাজ জনগণের সম্পদ, এবং গৌরবও জনগণের। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এই ছোট্ট ঘটনাতেই তা প্রমাণ করলেন।
এই বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। বাংলাদেশ চাই স্বচ্ছতা, চাই সৎ নেতৃত্ব, চাই এমন মানুষ যারা সাহস করে বলবে, “এটা কি আমার বাপের টাকায় করছে?”
আমরা জানি এধরনের মানুষ কম। কিন্তু এরা কম হলেও তাদের কথা আশা জাগায় যে বাংলাদেশ দুর্নীতির বোঝা নামাতে পারলে সত্যিকার অর্থে একটি সুন্দর, গর্বিত দেশে পরিণত করা সম্ভব।