বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন সবাই মিষ্টি কথায় মানুষকে খুশি রাখার চেষ্টা করে, তখন কেউ কেউ সাহস করে সত্য বলতে চান। আর সেই সত্যি কথার জন্য ঝড় তুলেছেন বিএনপির উপদেষ্টা ফজলুর রহমান। জুলাই মাসের আন্দোলন নিয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল সরাসরি, তীক্ষ্ণ আর বাস্তবভিত্তিক—যা শোনার পর অনেক দলের চেহারার রঙ পাল্টে গেছে।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, “জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বে যারা ছিলেন, তারা নেতার চেয়ে অভিনেতার মতো আচরণ করেছেন, আন্দোলনের পেছনে অন্য শক্তি কাজ করছিল।” একেবারে অযথা প্রশংসা নয়, নাটক নয়—তাঁর বক্তব্য ছিল যে অনেক কিছু সামনে যেমন দেখা যায়, আসল চিত্র তেমন নয়।

কিন্তু ফজলুর রহমান কেবল আজকের উপদেষ্টা নন। তিনি রাজনীতির মঞ্চের একজন অভিজ্ঞ মানুষ। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু করে ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জে মুজিববাহিনীর প্রধান ছিলেন, পরে জাতীয় সংসদে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এখন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থাৎ তিনি রাজনীতির অনেক রূপ দেখেছেন, অনেক পথ হেঁটেছেন।

এখন প্রশ্ন হলো, সত্য কথা বললেই এত রাগ কেন? যদি কারও কিছু লুকানোর না থাকে, তবে ভয়ের কারণই বা কী? দলের ভেতর শো-কজ, বাইরে ছাত্র সংগঠনের নাটকীয়তা, পুতুল দাহ—সব মিলিয়ে যেন ফজলু ভাইয়ের কথাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলল।

আসলে ফজলুর রহমান যা বলেছেন, সেটাই জনতার মনে লুকানো প্রশ্ন। অনেক আন্দোলনের পেছনে সত্যিই স্বার্থের খেলা চলে, অনেক মুখোশধারী নেতা নিজেদের লাভের জন্য জনতাকে ব্যবহার করে। তিনি শুধু সেই মুখোশের দিকে আঙুল তুলেছেন।

এখন বাংলাদেশে খবর এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু একটা নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে- ফজলুর রহমান। সত্যকে ভয় পেলে মুখোশ খুলে যায়। ফজলু ভাই শুধু আয়নাটা দেখালেন। আর যারা বেশি চিৎকার করছেন, তারা হয়তো সেই আয়নায় নিজেদের দেখেছেন।